
রাশপ্রিন্ট ডেস্ক : ‘আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি’ শিরোনামে মাকসুদুল হকের বই নিয়ে এবারকার মেলায় ব্যান্ডসংগীতপিপাসুদের আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের পরিসরগুলোতে। এখনও যন্ত্রস্থ বইটি শিগগিরই পাঠকের নাগালে এসে যাবে বলে প্রকাশনালয়সূত্রে জানা যায়। বাংলার ব্যান্ডমায়েস্ত্রো মাকসুদের বইটি প্রকাশ করছে ‘অগ্রদূত’ প্রকাশনী। মেলাকালীন অগ্রদূতের স্টলে অচিরেই বইটির দেখা পাওয়া যাবে।
জ্যাজ্-রক্ ফিউশন্ ধারায় রবীন্দ্রনাথের একটা গান গেয়ে এক-দশক আগে দেশে-বিদেশে ব্যাপক রবীন্দ্ররক্ষণশীল সমাজের রোষানলে পড়েছিলেন মাকসুদুল হক; প্রশংসিতও হয়েছিলেন প্রভূতভাবে দেশের তরুণ ও যুবাশ্রেণির কাছে। এই বইটিতে সেই সময়ের ঝড়ো মুহূর্তগুলো সবিস্তার পাওয়া যাবে। এছাড়া বাংলাদেশের মিউজিক্যাল্ অ্যাসোসিয়েশন্ তথা ‘বামবা’ প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি মাকসুদুল হকের লেখায় ব্যান্ডসংগীতের পূর্বাপর বৃত্তান্ত অত্যন্ত বলিষ্ঠ গদ্যে এসেছে বিভিন্ন সময়ে। সেই লেখাগুলো তো অবশ্যই থাকছে এই নবনির্মিত কলেবরের গ্রন্থে, প্রকাশকসূত্রে জানা যাচ্ছে।
লেখাগুলোর মধ্যে কয়েকটি শিরোনাম উদ্ধৃত করলেই পাঠকের ধারণা হবে এর অন্তর্গত রক্তের বিষয়ে : যেমন একটা প্রবন্ধ হচ্ছে ‘এই আমাদের অপরূপ অপসংস্কৃতি’ শীর্ষক, তেমনি রয়েছে ‘রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে কথা’, ‘গগনবিদারী ওয়াহিদুল হক সমীপেষু : না-চাহিতে এত দেওয়া’, ‘রবীন্দ্ররাজাকারের কবলে’, ‘আজকের প্রজন্ম ও মুরব্বিতন্ত্র’ ছাড়াও রয়েছে বইয়ের নামপ্রবন্ধটির তীক্ষ্ণ বিশ্লেষণী ব্যঙ্গ ও স্বতঃসমালোচনা।
বাংলাদেশের নতুন দিনের গানের কারিগরদের মধ্যে একজন মাকসুদুল হক। ব্যান্ডসংগীতের ভুবনে সবচেয়ে উজ্জ্বল ও উদ্দাম সময়ের প্রতিভূদের মধ্যে অন্যতম মাকসুদ। টানা চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই ক্ষেত্রটিতে তার বিচরণ অত্যন্ত সৃষ্টিদীপ্ত, পদক্ষেপগুলো সুস্পষ্টরূপেই দৃপ্ত, মাকসুদের অবদান এদেশের সংগীত-অঙ্গনে একবাক্যেই স্বীকৃত। নতুন দিনের ব্যান্ড ও ননব্যান্ড সংগীতকারদের কাছে ম্যাক তথা মাকসুদ অত্যন্ত উদ্দীপক এক নাম। ‘ফিডব্যাক’ ব্যান্ডের সঙ্গে আড়াই দশক সৃজনকাল শেষে মাকসুদ পৃথক ব্যান্ড গড়ে তোলেন ‘মাকসুদ ও ঢাকা’ শীর্ষক নামপরিচয়ে এবং এই ব্যানারে একে একে এসেছে তিনটি সফল অ্যালবাম।
উল্লেখ্য, বইটি ঠিক একই শিরোনামে দেড়-দশক আগে দেশের একটি খ্যাতনামা প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছিল। দীর্ঘদিন বইটি পাঠকচাহিদা সত্ত্বেও মুদ্রণহীন ছিল। অগ্রদূতের উদ্যোগে সম্প্রতি সেই পাঠকচাহিদার প্রতি দৃষ্টি ফেরানোর চেষ্টার একপর্যায়ে লেখক মাকসুদুল হক বিষয়টা আমলে নেন। পূর্ববর্তী বইয়ের প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পাদন ছাড়াও বইয়ের কন্টেন্ট হিশেবে যুক্ত হয় একাধিক নতুন পরিচ্ছেদ। ফলে প্রকাশিতব্য পাণ্ডুলিপিটি চূড়ান্ত পর্যায়ে হয়ে উঠেছে একটা প্রায়-নতুন বই। যারা আগেও বইটির মূদ্রিত রূপ সংগ্রহে রেখেছিলেন, কিংবা যারা নতুন সম্ভাব্য পাঠক, সবাই সমানভাবে এবারকার বইটি নিতে পারবেন বলে মনে করা যাচ্ছে।
বর্ধিত কলেবরে ‘আমি বাংলাদেশের দালাল বলছি’ কিছুদিনের মধ্যেই ২০১৬ একুশে বইমেলায় পাওয়া যাবে। ক্রেতা ও পাঠক যারা বাংলাদেশের ব্যান্ডমিউজিক সাবস্ক্রাইব্ করেন নিয়মিত, মাকসুদের গুণগ্রাহী ছাড়াও যারা বাংলা ব্যান্ডসংগীত আন্দোলনের প্রবাহ পেতে চান শিরায়-ধমনীতে, ‘অগ্রদূত’ প্রকাশনীর স্টলে যেয়ে বইটির খোঁজপাত্তা জানতে পারেন।