সাম্প্রতিক

একগুচ্ছ কবিতা । সৈয়দ শিশির

জন্ম বিশ্বাস

এ পৃথিবীতে আসবো এমন কোনো ভাবনা
কখনো আমার ছিলো না;
অর্থাৎ, আমি জন্মগ্রহণ করিনি। বলা যায়—
বিশেষ কোনো পরিস্থিতি অথবা প্রক্রিয়ার শিকার;
যেমন— সুইচ টিপলে ঘুমন্ত বাতি জ্বলে ওঠে।

জীবনের খেলাঘরেও কাউকে বিশ্বাস করতে চাইনি।
ফুটন্ত গোলাপ, প্রস্ফুটিত গোলাপ কিংবা পদদলিত গোলাপ
কোনোটাতেই আমার বিশ্বাস ছিলো না। বলা যায়—
বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েই বিশ্বাসহারা হয়েছিলাম।

মনে হয়

মনে হয় :
স্নেহভূমিতে আজকাল খুব সহজেই
হানা দেয় নরকের কীট,
হায়রে কীট! মায়া হয়। অকৃত্রিম মায়া।
কেন অকারণ হানা?

মনে হয় :
অবুঝ আর মৃতপ্রায় কীট
হাতিয়ে নিতে চায় স্বর্গভূমি,
অগ্রজের ছায়া করুণায় উল্লসিত। বেপরোয়া।
পারলে আয়নার সামনে দাঁড়া।

মনে হয় :
নর্দমার জলেই পবিত্র হবে কীট
তবে পদ্মের বুকে কাদা ছিটিয়ে,
করুণার হাত সরে গেলে অন্ধকার! গলিপথ।
কিছুটা সময় মাতলামি।

মনে হয় :
কীট হাসে, কীট উড়ে; কখনো-বা ঝিম ধরে।
ভূমিজুড়ে হাসি ঝরে; কীট তবু নড়েচড়ে।

প্রিয়জন

প্রিয়জন পাওয়া সহজ কথা নয়, আরও কঠিন
কারও ভাবনায় প্রিয় হয়ে ওঠা,
তেমন কঠিনেরে ভালোবেসেই আজ শুধু শূন্যতা।

অপমানের জ্বালা ভুলি কেমনে বলো, কিছু জ্বালা থাকে
হৃদয়ের অতলে, ক্ষণে ক্ষণে জ্বলে—
যে জ্বালা দিলো দেবী ভালোবেসে আমাকে, সে তো মহাদামি।
প্রিয়জন আমার জীবনের ডায়রি, থেমে থাকা চোখ
লাজুক সময়ের উড়ন্ত ডানায় হেঁটে চলা চিতা
যে চিতা না চিনলে বুঝে নেয় নগদে— আপন খোরাক।

বোকার প্রিয়জন, হাঁটি হাঁটি ভাবনা— সবকিছু আজ
মোহের আদালতে আহত সময়
বেদনার চিতায় মুখ টিপে হাসি; হায়! প্রিয়জন…

ঈর্ষা আমার

ঈর্ষায় জ্বলি… ঈর্ষায় জ্বলি
আমার আগে তিমির যখন
পরখ করে তোমায়।

ঈর্ষায় পুড়ি… ঈর্ষায় পুড়ি
আমার আগে দীপিকা যখন
তোমার চোখে তাকায়।

ঈর্ষায় কাঁদি… ঈর্ষায় কাঁদি
আমার আগে অনিল যখন
তোমার দেহ জুড়ায়।

ঈর্ষায় থামি… ঈর্ষায় থামি
আমার আগে বাদল যখন
কদম দিয়ে হাসায়।

ঈর্ষায় ভাবি… ঈর্ষায় ভাবি
আমার আগে কোন সে হৃদয়
ভাবনা কিছু শেখায়?

সৈয়দ শিশির

জন্ম ১৯৭৭ সালের ২৩ জুলাই। পৈতৃক নিবাস কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়সূতী গ্রামে। পেশায় সাংবাদিক। শূন্য দশকের শুরু থেকে নিয়মিত কবিতা লিখছেন। ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘আমি তার, যে আমার’। কবিতার পাশাপাশি লিখছেন প্রবন্ধ-নিবন্ধ, কলাম, সাহিত্য সমালোচনা, গল্প ও ছড়া। সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে প্রকৃতি যাঁর গুরু। এক সময় সম্পাদনা করতেন ছোটকাগজ ‘অবিশঙ্ক প্রতীতি, তারপর ‘আড়াইলেন’। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় রিপোর্টার, ফিচার লেখক, সাব-এডিটর, সহযোগী সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। একাধিক প্রকাশনা সংস্থায় সিনিয়র লেখক, সম্পাদক ও আরঅ্যান্ডডি’র প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বর্তমানে পাঠকপ্রিয় একটি সাপ্তাহিকে চিফ রিপোর্টার ও সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। soyedfaizul@gmail.com ০১৭১৫ ৬৩০ ৩৩০

লেখকের অন্যান্য পোস্ট

Tags: , , , , ,

লেখকের অন্যান্য পোস্ট :

সাম্প্রতিক পোষ্ট