সাম্প্রতিক

এক গুচ্ছ কবিতা । দঈত আননাহাল

অল্প অসামান্য!

(এত কথা মানুষের!
কিন্তু সে কথা কেন এত কথায় প্রকাশিতে হয়! অল্প কথায় কি অনেক কথা প্রকাশ করা যায় না!)

তোমার বিশাল মন কি আর অল্প ভালোবাসায় ভরে! কিন্তু তুমি কি উপায়ে বোঝ সেই বিশাল ভালো-বাসারে?
সে কি প্রকাশিত হয়নাই সামান্য সেই নখের আঁচড়ে!

মানুষ তো, খুন হয় অল্প— একটু তাকালে।
এত কি আর বলতে লাগে;
যখন ফুটছে ফুল, কথার আগে!

আমএর আইডেন্টিটি ক্রাইসিস!

আম তো আসলে আম হিসাবেই মারা যায়; কাঠাল বা লিচুতে রুপান্তরিত হইয়া তো মরে না! কিন্তু হায়! আমের আকাঙ্খা! সে তো অনেক অনেক উজ্জ্বল ঝুইলা থাকা কাঠালের একজন হইতে চায়, সে হইতে চায় দামী আপেল, রসময় আঙুর অথবা নেহাৎ থোকা থোকা লিচুদের একজন!

আম প্রথমে দেখে লোকপ্রিয় দোল দোল উজ্বল কাঠালদের, তারপর আমের তৈয়ার হয় তাহাদের কাছে যায়া দেখবার বাসনা; সে চায় নিকটে যাইতে; তারপর কেউ আম’রে নিয়া যদি যায় কাঠাল, আঙুর অথবা লিচুর কাছে আম-এর ভেতরে লুকানো সুপ্ত বাসনা ভেতর থিকা ফুটতে ফুটতে বাইরায়া আসে, সে তো চায় কাঠাল, আঙুর অথবা হইতে লিচু! ভুলতে ভুলতে আর বাকী সকল কিছু। আম ঝুলতে থাকে; দুলতে থাকে; কাঠালের পাশে পাশে; খুশি খুশি বেশ কাঠাল ভাবজ!

সকল ফলেরই আছে নিজস্ব ঋতু। আমেরা ভুইলা যায় নিজের বীজের বাইরে আর কোন চরিত্র নিয়া তার আবির্ভূত হওয়া সম্ভব নহে। ভুইলা যাইতে চাওয়াটাই তাদেররে কইরা তোলে আরো আরো আম; সত্যিকারের আম।

কাঠালের পাশে পাশে দুলতে দুলতে ঝুলতে ঝুলতে খুলতে খুলতে নিরাভরন কখন যে নিজের অজান্তে সে খ’সে পড়া এক পঁচা আম! আম তা জানে না।

আম ভুইলা যায় সব কিছু। কাঠাল কাঠাল হাহাকার নিয়া মইরা যায় সে আরো গভীর এক আম’ই হয়া! হায় গো ট্রাজেডি!

কিছু নাই, কেউ

মৃত মানুষের স্মৃতির মত দিন; সুন্দর, ঘটে যায়!
রোদ আছে শরীরে; হাওয়া আছে মনে — ঠান্ডা;
বাইরে শরীর পোড়ে, ভেতরে মেরুর হাওয়া বরফের নদী হ’তে; সে নদী গলতেছে এমন রোদে।

আগুন আর বরফ আছে, আর কিছু নাই।

ইশারা!

আমাদের মাঝখানে কোন দূরত্ব নাই — তুমি ছাড়া;
ওগো ইশারা! আঙুল ছড়ালে দিগন্তে, উড়ে আসবে
মেঘ; পাখির অধিক মায়ায় আঙুল গড়িয়ে সে
তোমার খোঁপায়। কেবল ইশারা — মোমগলা গল্প
তারপর বাকীটা; আর দূরত্ব কেবলই মিথ তখন।

ঝরঝরজ্বর!

জ্বরের সাথে একটুখানি ভদকা মেশানো
বৃষ্টি পরবর্তি আর্দ্রতাটুকু লেপটে চোখে;
দীর্ঘশ্বাসের ওমের ভেতরে গুটিশুটি রাত
শুন্যে ভাসতেছে বিছানার ভ্রম ও বালিশ!

এইসব রাতের বিরুদ্ধে
কাউকে দেইনি নালিশ।

অশ্রু তো অশ্রুত!

চোখজোড়া জল সইতে না পেরে
                গ
.                    ড়া
                       য়ে

  ট
     ল
.   ম
.        ল
চলে গেল চশমার কাছে…

 

 এই নিশা, এই!

শীতার্ত পাখিদের নীড় নাই;
কিছু কিছু রেস্তোরায়; পথের মোড়ে
যেমন বসে থাকে অপেক্ষা, ছাদের মেঘেরা;
পাখিগুলি ভেজা গাছের মগডালে কিছু
কিছু ডাক নাম, ভাষার ভেতরে যেনবা বাসা;
পরিত্যাক্ত সারি সারি ক্যকটাস মাখামাখি টবেরা
অস্ফুটে ফিসফিস, ‘এই নিশা, এই’ মাঝে
মাঝে কন্ঠ চিরে চমকায় বিদ্যুৎ, ঝর হয়;
বেদনারা আপন আর সকলে পর হয়
বর্ষাকাতর কিছু কিছু মানুষের …

দঈত আননাহাল

কবি, সিনেমাটোগ্রাফার, ফোটোগ্রাফিশিল্পী।

লেখকের অন্যান্য পোস্ট

লেখকের সোশাল লিংকস:
FacebookFlickr

Tags: ,

লেখকের অন্যান্য পোস্ট :

সাম্প্রতিক পোষ্ট