সাম্প্রতিক

ছেড়ে আসার সময় ও ডুবুরি । শুক্লা মালাকার

উত্তরণ

মনে পড়ে, হুল্লুড়ে কফিহাউস?
পলাতক রদ্দুরে রাঙানো গাল
নির্জন ময়দানের গাস-ফড়িং
অবাঞ্ছিত কালবৈশাখীতে উড়ে যাওয়া উড়নি?
মনে পড়ে, তোমার উত্তরণ বিন্দু?

উড়ালপুলের বিলুপ্ত সীমানা ছাড়িয়েও
কোনও অজানা উচ্চতায়
উজ্বল থেকে উজ্বলতর সামাজিক ঘেরাটোপে
আলোর স্রোত পেরিয়ে তুমি দেখবে
শুনশান জীবন,
নীরবতা ছাড়া কেউ নেই পাশে।

নীচে, বহু নীচে, শহরের রাস্তায়
সরু ফিতের মতো বন্ধু-পাড়া,
না-হওয়া প্রেম,খানদানি পিছুটান
রাত হয়ে ভেসে আছে।                      

উত্তরাধিকার

হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল শৈশব
রক্তস্নাত দু পা ছড়িয়ে আতঙ্কে কাঁপছে কৈশোর-
একটা দূর্দান্ত রহস্যময় বদলের আভাস
একটি অনাকাঙ্খিত পার্থিব দোতারা এবার
সুরে সুরে জাগিয়ে তুলবে মাতৃত্ব,
অদ্ভুতভাবে বদলে যাবে পরিচিত সব দৃষ্টি
অবাধ্য রাক্ষসের মতো জীবন গিলে খাবে মেয়েবেলা
বনেদী উত্তরাধিকার সূত্রে গমরঙা শরীরে
মিশে যাবে নারী নারী গন্ধ—             

কিছুটা থেকেই যায়

ছেড়ে আসার সময় সবটা আনতে পারিনি
থেকেই গেছে কিছুটা নিঝুম মন,
কাবার্ডে রয়ে গেছে
অনেকটা ভালো থাকার অভিনয়।
বইয়ের ভাঁজে রাখা ছিল
নিষিদ্ধ স্বাধীনতার মতো গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়
কিছুতেই খুঁজে পেলাম না তাকে।

চেষ্ট অফ ড্রয়ারের চাবি হারিয়েছিল
সেখানে আটকে রয়েছে
ভালোলাগা চোখের প্রথম আমন্ত্রণলিপি।
দেখে এলাম — কিচেনে সারিবদ্ধ কৌটোয় ভরা
গুঁড়ো গুঁড়ো যত্ন — আরশোলার আঁতুড়ঘর,
দেওয়ালে আজও ঝুলছে
জাটিঙ্গায় দেখা আশ্চর্য্য সেই রাত
আগুনে আত্মহত্যা করছে পাখিদের ঝাঁক।
পুরোপুরি ফেরা বোধহয় যায় না
এই যেমন ভুল করে ফেলে এলাম
উকিলের মুখোমুখি বোঝাপড়ার সকাল
হাজারখানেক বিষণ্ণ সঙ্গম
আর,
এক ধুলোমাখা গান—
বিকেলের তানপুরায়।

 

ডুবুরি

শরীরের প্রতিটি কোনায় বাজে পিয়ানো
কাধেঁ, ঠোঁটে, চিবুকে সপ্তসুর
ভিতরের বুনো ঝোঁপে তীব্র রেষারেষি
স্থুল কাম,অন্ধ ক্রোধ আর
উলঙ্গ ক্ষোভ
ডুবুরি সর্দার তোমার
অবিশ্বাস্য রূপান্তরের লোভ।

শুক্লা মালাকার

জন্ম কলকাতার, পশ্চিমবঙ্গ। লেখালেখি অনেকদিন বন্ধ রেখে ফের শুরু করেছেন, ওয়েবজিনেই।

লেখকের অন্যান্য পোস্ট

লেখকের সোশাল লিংকস:
Facebook

Tags: , , , ,

লেখকের অন্যান্য পোস্ট :

সাম্প্রতিক পোষ্ট