সাম্প্রতিক

দুটি কবিতা । মনিকা আহমেদ

অমরাবতী

একদিন জানালায় উকিঁ দিতো ফাল্গুনী চাঁদ । জ্যোৎস্নায়  হাসতো  নটবর । যুগল  ভ্রুভঙ্গ  চোখ তুলে তাকালেই মনে মনে বলতাম-  তুমি  কী  জারুল  বাতাস ! সবুজ পাতার  সুগন্ধ ! নাকি নিয়ে এলে অমরাবতীর কোমল  মুকুল ?  তখনো  গাছেরা ঢেউ হয়ে যেতো.. 
নাক্ষত্রিক নৃত্যে   চোখের তারায় আমার কথারা হারাতো.. আমি কিছুই বলিনি তোমায় 
বাড়োয়ারি দিনের রৌদ্ররঙে  চোখের  ক্যানভাসে জলরঙ ছবি এঁকেছি । দূর অতীতের ছায়া ধূলো হয়ে উড়ে গেছে কবেই…কাছে যাওয়া হয়নি কোনদিন !  সীমানা  ছিল না, তোমাতে – আমাতে;  তবু প্রবল বিচ্ছিন্নতা ! 
এটা ঠিক মনে আছে, নকসীকাঁথা উজিয়ে  একজোড়া  চোখ সূদূরে হারাতো কি বহ্বলতায়.. 
তখন স্বপ্ন বুঝতো , হদয়ঙ্গম হতো কত কিছু, বুনোমেঘ বিলি দিতো বুনোচুলে । 
খিল খিল হাসিগুলো  ঢেউ -ঢেউ খেলে যেতো তোমার সাগরে ।  মৃত্যুর হুইসেল ছাড়া সব শব্দ শুনতো অচিন পাখি । তখন চোখ বন্ধ করলেই মৌসুমী ঝড়ো বাতাস…বুকের ভেতর  উথালপাথাল । শরতের বেহালায় বাজলো বৈরী সুর ।  খোলা চুল উড়তো লেলুয়া বাতাসে; কিছু উড়ো চিঠি নিয়ে আসতো বাসন্তী রঙ দিনের নিঃস্তব্ধতা ভেঙে…
চকিতেই_,চকিতেই_ কী  অপূর্ব গোধূলি! দূরে  হেঁয়ালি তীরন্দাজ। 
আর লুকোচুরি হয় না চাঁদ কিংবা সবুজ পাতাতে
রাজকুমারের অভয়বাণী শোনা না পাখি,
বৈরাগী মন
পৌষের বাতাসই এমন… 

আত্মদহন

আজকাল কোন স্বপ্ন দেখি না  হাতের  ওপর  হাত রাখি না
সাঝঁ বেলাতে পুকুর পাড়ে জলের ছায়ায়  মুখ দেখি না ।

লাজুক মুখে মন্ত্রমুগ্ধ  হাসতে আমার  ভাল্লাগে না 
জলসা ঘরে জল হাওয়াতে ভাসতে এখন মন মানে না,;
লঙ্কা মেখে ভাত মুখে দেই  ঝাঁঝে তবু  মুখ পোড়ে না;                   
মন ভোলানো কন্ঠে তোমার তূর্যনিনাদ  মন টানে না। 

এখন আমার বিহঙ্গ বেলা নিঃশব্দে আঁকি হেম
আর আঁকি না ফুলেল ফ্রেমে;

তোমার মেকী প্রেম!

পুরোনো  চাদরে আদরে লুকোয় রাত জোনাকি; সে কী  বিভ্রম? 
কোজাগরী পূর্ণিমা এলেই আমার বাড়ে আত্মদহন ! 

[ পৃথিবীতে সব প্রেমই ক্যাকটাস এর মতন, কন্টকময় ]

মনিকা আহমেদ

কবি। জন্ম : ১০ই ভাদ্র, ২৫শে অগাষ্ট' ১৯৭৫। `চর্যাপদ’ লিটল ম্যাগাজিনে প্রথম প্রকাশিত হয় লেখা। লেখালেখি ছাড়াও গান ও লংড্রাইভিয়ে তার শখ। পেশায় বিজনেস। E-mail: chairman.aasteel@gmail.com

লেখকের অন্যান্য পোস্ট

Tags: , , ,

লেখকের অন্যান্য পোস্ট :

সাম্প্রতিক পোষ্ট